সি.এ বা চাটার্ড একাউন্টেন্ট সম্পূর্নই একটি প্রফেশনাল কোর্স। সি.এ প্রফেশন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত সর্ববৃহৎ ও স্বাধীন পেশা, সারা বিশ্বেই পেশা হিসাবে সি.এ অত্যন্ত জনপ্রিয়। একজন যোগ্যতাসম্পন্ন চাটার্ড একাউন্ট্যান্ট চাইলে যেকোন দেশে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির বিশেষ অধ্যাদেশ বলে বাংলাদেশে এই কোর্সটি প্রথম চালু হয়। সে সময়েই প্রতিষ্ঠিত হয় “দি ইনস্টিটিউট অব চাটার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ” (আইসিএবি)। যা বর্তমানে একটি স্বাধীন এবং সায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি চাটার্ড একাউন্টেন্সি (সি.এ) প্রফেশনের সমস্ত বিষয় নিয়ন্ত্রন ও পরিচালনা করে। আইসিএবি ইনস্টিটিউটের কার্যালয় সি.এ ভবন কাওরানবাজার ।
১০০% প্রফেশনাল এই কোর্সটিতে পড়ার জন্য আইসিএবি এর নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে।
সি. এ. পড়তে কি কি যোগ্যতা লাগে আসুন জেনে নেইঃ
১। S.S.C. বা H.S.C. অথবা সমমানের উভয় পরীক্ষার ফলাফল মিলিয়ে কোন শিক্ষার্থী যদি কমপক্ষে ৯ পয়েন্ট পায় এবং কমপক্ষে যেকোন একটিতে এ প্লাস থাকে তাহলে সে সি.এ পড়তে পারবে।
২। স্নাতক পাশের পর (যে কেউ যে কোন বিষয় থেকে) সি.এ পড়তে পারবে। সে ক্ষেত্রে তাকে অবশ্যই স্নাতক পর্যন্ত সকল একাডেমিক পরীক্ষা মিলিয়ে কমপক্ষে ৭ পয়েন্ট পেতে হবে।
সি.এ. পড়ার নিয়মকানুন আইসিএবি ইনস্টিটিউটের নিয়ন্ত্রনে পরিবর্তন হতে পারে তাই সঠিক তথ্য পেতে http://www.icab.org.bd/ সাইটে গিয়ে ICAB Entry Criteria তে ক্লিক করলেই বিস্তারিত পাওয়া যাবে।
যদি কোন ছাত্র-ছাত্রী সি.এ. পড়তে চায় তবে তাকে অবশ্যই সি.এ. ফার্মে CV জমা দিতে হবে। কারণ এই ডিগ্রী অর্জন করতে হলে পড়াশুনার পাশাপাশি সি.এ. ফার্মে কাজ শিখতে হয়। বাংলাদেশে প্রায় ২০০ এর মত সি.এ. ফার্ম আছে যার লিস্ট http://www.icab.org.bd/ ওয়েব সাইট থেকে দেখে নিতে পারেন।
CV জমা দেয়ার পর ফার্মগুলো লিখিত পরীক্ষার জন্য ডাকবে। তবে সব ফার্মে এখনো এ পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়নি। Accounting, Auditing, Tax, English, General Math(Basic), Critical Reasoning বিষয়গুলোর উপর লিখিত পরীক্ষা হয়ে থাকে। আবার General Math(Basic), Critical Reasoning থেকে সকল ফার্মে প্রশ্ন করা হয় না। তাই আগে থেকেই খোঁজ খবর নিয়ে এবং ভাল প্রস্তুতির সাথে পরীক্ষা দিতে হবে কারণ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়। মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করলে আর্টিকেলশীপ ছাত্র হিসাবে বিবেচিত করা হয়। তারপর ফার্মের নীতিমালা অনুযায়ী ফার্মে যোগদানের পরবর্তী ২/৩ মাস প্রভিশন প্রিয়ড হিসাবে কাজ করতে হয় এবং ঐ ফার্মের মাধ্যমে আই.সি.এ.বি তে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয়। নিবন্ধনের তারিখ থেকে ৩ বছর ঐ সি.এ. ফার্মের অধীনে কাজ করতে হয়। বর্তমানে নিবন্ধনের জন্য ৩০,০০০ টাকা ফি দিতে হয়। নিবন্ধনের পর আর টাকা পয়সা খরচ করতে হয় না বরং বরং ফার্ম থেকে প্রত্যেক মাসে আই.সি.এ.বি এর নিয়ম অনুযায়ী নিদ্দিষ্ট পরিমান ভাতা দেয়া হয়। আই.সি.এ.বি এর বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী আর্টিকেলশীপ স্টুডেন্টদের মাসিক ভাতার পরিমাণ –
১ম বছর ৩০০০ টাকা
২য় বছর ৩৫০০ টাকা
৩য় বছর ৪০০০ টাকা
সি.এ. ফার্মে কাজ শুরু করার পর প্রবোশনাল সময় থাকে যা ফার্ম ভেদে ২,৪,৬,৯ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরপর রেজিষ্ট্রেশন করার অনুমতি দেয়া হয়। রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হলে শিক্ষাথীর্কে আই.সি.এ.বি কর্তৃক বিনামূল্যে বই, লাইব্রেরী কার্ড সরবরাহ করা হবে এবং কোচিং ক্লাস করানো হয়।