ভ্রমণপিয়াসী মানুষের জন্য পুরো পৃথিবীই একটা দেশ, একটা মানচিত্র। নিজস্ব ভৌগলিক সীমারেখার বাইরের দুনিয়াটা দূর্বার আকর্ষনে টানে। একটি সুন্দর স্থান যেমন বারবার দেখার জন্য মনকে ব্যাকুল করে তেমনি বিশ্বের কিছু খারাপ দেশে ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। খারাপ দেশ সমূহের তালিকা মূলত জনমত জরীপ, নিরাপত্তা, খাদ্য, পরিবহন ব্যবস্থা এবং সুযোগ ও অপরাধ এই সব উপাদানের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয়েছে কারণ আমরা চাইনা আপনার আনন্দময় ভ্রমণটি নষ্ট হোক। আসুন তেমনি কিছু দেশ সম্পর্কে জেনে নেই।

১। সোমালিয়াঃ
আফ্রিকার সব দেশে স্ফটিক-স্বচ্ছ সৈকত, উষ্ণমগুলির অঞ্চলের বৃক্ষহীন তৃণভূমি কিংবা বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে এই যে আফ্রিকা তাদের দারিদ্রতা এবং দূর্বল ব্যবস্থাপনা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। সোমালিয়া এর আদর্শ উদাহারণ। শুধুমাত্র দারিদ্র্য-ই একমাত্র কারণ নয়, সোমালিয়ার শহরগুলি মানব পাচার, জলদস্যুতা, অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা এবং ড্রাগ চোরাচালানের মত কাজের জন্য প্রসিদ্ধ। বিশ্বের অন্যান্ন যেকোন দেশের তুলনায় সোমালিয়ায় অপরাধের হার অনেক বেশি। তাই সোমালিয়ায় ভ্রমণের আগের আরেকবার ভেবে দেখবেন কি?

২। গায়ানাঃ
গায়ানা দক্ষিণ আমেরিকা ক্যারিবীয় উপকূলবর্তী একটি ছোট দেশ। যদিও দেশটি ভ্রমণে তেমন ক্ষতির আশংকা নেই কিন্তুও তবুও এটি একটি বাড়তি সতর্কতা কারণ গায়ানার জর্জটাউন মত শহর পর্যটকদের জন্য বেশ বিপজ্জনক বিশেষ করে রাতের বেলায়। এছাড়াও ভেনেজুয়েলা এবং সুরিনাম সাথে সীমান্তে বিরোধ জন্য গায়ানা পরিচিত। যদিও দেশটিতে কিছু সুন্দর জলপ্রপাত, জাতীয় উদ্যান, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রয়েছে কিন্তু এসবের বিকল্প দক্ষিণ আমেরিকান ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে খুঁজে নেয়াই বুদ্ধিমান কাজ হবে।

৩। আফগানিস্তানঃ
অন্য সব দেশ থেকে আফগানিস্থান আলাদা। শ্রেষ্ট নাটুকে রাস্তা এবং অনিন্দ সুন্দর পর্যটকদের আকর্ষন করতে বাধ্য। খেলাধুলার কিছু কিছু শাখায় আফগানদের সাফল্য ও আফগানিস্থানের খাঁটি কাবাব পৃথিবী সমাদৃত। কিন্তু আফগানিস্থানের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থা মোটেও ভ্রমণকারীদের জন্য সহায়ক নয়। যুদ্ধপরবর্তী সময়ের ধাক্কা এখনো দেশটি সামলিয়ে উঠতে পারেনি বরং দেশটির স্থানীয় বাসীন্দারা পর্যন্ত আতঙ্কে দিনাতিপাত করে। নিরাপত্তার ব্যাপারে আপোষ করে দেশটিতে ভ্রমণ করা মোটেও সুখকর হবে না।

৪। টুভালুঃ
আপনি এই দেশর নাম কখনো শুনে থাকতে পারেন। টুভালু ছোট্ট এক দেশ এবং বিশ্বের ক্ষুদ্রতম জাতিগুলির মধ্যে অন্যতম। এই দেশ সমুদ্রতল থেকে মাত্র 7 ফুট উচ্চতায় আছে যার কারণে ভৌগলিক ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে এই দেশ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে তলিয়ে যাবে। টুভালুতে পরিবহন এবং সুযোগ-সুবিধা খুবই খারাপ। এছাড়াও, এই ছোট দেশে পৌঁছানোর জন্য ফিজি থেকে বিমানে চড়তে হয় এবং সপ্তাহে মাত্র দুটি ফ্লাইট আছে। টুভালুতে কোন পর্যটন কেন্দ্র, চমৎকার সৈকত কিংবা আরামপ্রদ হোটেল এর কিছুই আপনি পাবেন না। আপনি যদি সৈকতে ভ্রমণের জন্য টুভালুকে বেছে নিয়ে থাকেন তবে অন্য কোন দেশ দেখুন।

৫। রাশিয়াঃ
অত্যন্ত রক্ষণশীল এ দেশটি ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকাই ভালো হবে। রাশিয়া তার নিজস্ব সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক ব্যাপারে খুবই সংকোচনশীল। আর আপনি যদি রাশিয়ায় চলেই যান তবে সেন্ট পিটার্স রাজপ্রাসাদ দেখতে ভুলবেন না।

৬। জ্যামাইকাঃ
জ্যামাইকা বালুকাময় সৈকত এবং বব মার্লে জন্য প্রসিদ্ধ। তবে অপ্রতিরোধ্য দারিদ্র্য, ডাকাতি এবং ছুরিকাঘাতের অসংখ্য ঘটনা পর্যটকদের কাছে জ্যামাইকাকে বিপদজনক করে তুলেছে। জ্যামাইকা ভ্রমণের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বস্তিতে ছোট বাজার এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে এড়িয়ে চলতে হবে তবেই আপনি Ocho Rios এর ব্লু হোল, সেভেন মেইল বীচ, ওয়াইএস ফলস, ডলফিনের সাতার ইত্যাদি উপভোগ করতে পারবেন। তবে অবশ্যই গ্রুপ বা দল বেধে ভ্রমণ করা অনেক নিরাপদ হবে আর সঙ্গে গাইড নিতে ভুলবেন না।
দ্বিতীয় পর্বঃ ভ্রমণের জন্যে সবচেয়ে বিপদজনক ১২টি দেশ (দ্বিতীয় পর্ব)