থানায় এজাহার করতে যেসব বিষয় জানতে হবে

জিডি (সাধারণ ডায়েরি) আর এজাহার এক বিষয় নয়। জিডি হচ্ছে থানায় কোনো ঘটনা সম্পর্কে অবগত করা মাত্র। অপরাধ বা অপরাধমূলক কোনো কিছু ঘটার পর সে বিষয়ে প্রতিকার পাওয়ার জন্য থানায় যে সংবাদ দেওয়া বা জানানো হয় তাকে এজাহার বা এফআইআর(ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) বলে। প্রকৃতপক্ষে, এজাহারের মাধ্যমে থানায় মামলা করা হয়। কারণ রাস্ট্র পক্ষের যে কোন মামলার আইনি প্রক্রিয়ার শুরু হয় এই এজহারের মাধ্যমে। একটা বিষয় খেয়াল রাখা উচিত যে, কখনো এজাহার করতে যেন দেরি না হয় কারণ এতে অনেক সময় মামলার গ্রহণ যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে আর দেরিতে এজাহার করলে মামলার গুণাগুণ নষ্ট হবার আশংকা থেকে। যার ফলে অভিযোগকারী ন্যায়বিচার না পাওয়ার সম্ভবনা বাড়ে। যদি কোনো কারণে এজাহার করতে দেরি হয়েই যায় তাহলে তার সুনির্দিষ্ট কারণসহ আবেদনে উল্লেখ করতে হবে।

এজাহার করার নিয়মঃ

কোনো অপরাধ সম্পর্কে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নিজে বা তাঁর পরিবারের কেউ কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তি, যিনি ঘটনা ঘটতে দেখেছেন কিংবা ঘটনা সম্পর্কে জানেন তিনি নিকটস্থ থানায় এজাহার করবেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর এজাহারের আবেদন করতে হবে। এতে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ, স্থান, সময় ও আসামির নাম ঠিকানা জানা থাকলে তার বিবরণ স্পষ্টভাবে লিখতে হবে। লিখিত এজাহারে এজাহারকারীর পূর্ণ ঠিকানা ও সই থাকতে হবে।

এজাহার সম্পর্কে জানার বিষয়ঃ

১। এজাহারে উল্লিখিত অপরাধ আমলযোগ্য হলে কিংবা এমন কোনো ঘটনাসংক্রান্ত হয়, যা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিলে আসামিদের ধরা যাবে বা শনাক্ত করা যাবে, সে ক্ষেত্রে পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবে।

২। অপরাধ আমলযোগ্য না হলে পুলিশ এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাখিল করবে। সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বা তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে অনুমতি নেবে।

৩। এজাহার করতে দেরি করা উচিত নয়। এতে ঘটনার আলামত নষ্ট হতে পারে। কোনো কারণে এজাহার করতে দেরি হলে তার সুনির্দিষ্ট কারণ আবেদনে উল্লেখ করতে হবে।

৪। একজন এজাহারকারী হচ্ছে মামলায় প্রথম সাক্ষী। তাই এজাহার গ্রহণের সময় কর্মকর্তাকে এজাহারকারী থেকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জিজ্ঞেস করে নিতে হবে।

৫। কোনো এজাহারকারী যদি মৌখিক বিবৃতি দেন, তাহলে তা লিখিত আকারে নিয়ে এজাহারকারীকে পড়ে শোনাতে হবে এবং তাঁর স্বাক্ষর নিতে হবে।

৬। যে কর্মকর্তা এজাহার লিখবেন, তিনিই সিল ও স্বাক্ষর দেবেন।

৭। কোনো আমলযোগ্য অপরাধের ঘটনা থানায় এলে তা এজাহার হিসেবে নিতে থানা বাধ্য থাকবে।

৮। কোনো ঘটনা টেলিফোনে বা ই-মেইলে পেলে সংবাদদাতাকে থানায় গিয়ে এজাহার করার কথা বলতে হবে। যদি বার্তা প্রেরণকারীকে পাওয়া না যায় এবং যদি ঘটনাটির সত্যতা পাওয়া যায়। তাহলে পুলিশের কর্মকর্তা নিজেই এজাহার করতে পারবেন।

Leave a Comment